Hot News

6/recent/ticker-posts

ফ্যাটি লিভার ও ডায়াবেটিস

 

ফ্যাটি লিভার ও ডায়াবেটিস

ফ্যাটি লিভার নামটি এখন সুপরিচিত। আশপাশের অনেককে বলতে শোনা যায়, আমার তো লিভারে চর্বি জমেছে বা ফ্যাটি লিভার ধরা পড়েছে। এ রোগের আসল নাম এমএএফএলডি বা মেটাবলিক ডিসফাংশন-অ্যাসোসিয়েটেড ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য এটি বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। কেননা এ দুটি রোগের সৃষ্টি ও প্যাথোফিজিওলজিক্যাল মেকানিজম ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।

দুই রোগের সংযোগ

  • ফ্যাটি লিভার ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স বা ইনসুলিন অকার্যকারিতার সঙ্গে দৃঢ়ভাবে যুক্ত। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স শরীরে ইনসুলিন কার্যকরভাবে ব্যবহার করার ক্ষমতা ব্যাহত করে। ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়ে। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স যকৃতে চর্বি জমার প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। এভাবেই এটি এমএএফএলডিতে অবদান রাখে।

  • শরীরের অতিরিক্ত ওজন উভয় রোগের জন্য উল্লেখযোগ্য ঝুঁকির কারণ।

  • উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে থাকা, অস্বাভাবিক কোলেস্টেরলের মাত্রা ও কোমরের চারপাশে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি এসব একসঙ্গে মিলে হয় মেটাবলিক সিনড্রোম। এমএএফএলডি এবং ডায়াবেটিস উভয়ের ঝুঁকি বাড়ায় এটি।

ব্যবস্থাপনা

  • একটি স্বাস্থ্যকর ওজন অর্জন ও বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শরীরের বর্তমান ওজনের ৫-১০ শতাংশ হ্রাস করতে পারলে এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করতে পারে ও লিভারের চর্বি কমাতে পারে।

  • ফল, সবজি, গোটা শস্য ও চর্বিহীন প্রোটিনসমৃদ্ধ সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন। উচ্চ ক্যালরি, উচ্চ চর্বিযুক্ত ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন।

  • সপ্তাহে ১৫০ মিনিট মাঝারি মাত্রার অ্যারোবিক ব্যায়াম (যেমন দ্রুত হাঁটা, সাইকেল চালানো, সাঁতার) ও সঙ্গে দুই বা তার বেশি দিন পেশি শক্তিশালী করার ক্রিয়াকলাপে যুক্ত থাকুন।

স্বাস্থ্যকর খাবার

  • খাবারে কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ সীমিত করা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। ফ্যাটি লিভারও কমায়।

  • খাদ্যতালিকায় ফাইবার বা আঁশসমৃদ্ধ খাবার যুক্ত করুন।

  • রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি রোধে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স আছে এমন খাবার বেছে নিন।

জীবনধারায় পরিবর্তন

  • সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও কার্ডিওভাসকুলার জটিলতার ঝুঁকি কমাতে ধূমপান ত্যাগ করা অপরিহার্য।

  • সাত-আট ঘণ্টা মানসম্মত ঘুম নিশ্চিত করুন।

চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা

  • ফ্যাটি লিভার ও ডায়াবেটিস এ উভয় অবস্থার ব্যবস্থাপনা ও নিরীক্ষণে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে নিয়মিত ফলোআপে থাকা।

  • সমন্বিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার জন্য ডায়েটিশিয়ান, এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, হেপাটোলজিস্ট ও ফিজিক্যাল থেরাপিস্টদের সম্পৃক্ততা জরুরি।

  • ডা. শাহজাদা সেলিমহরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, সহযোগী অধ্যাপক, এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়